
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নগরীর মানুষের বিনোদন ও অবসর সময় কাটানোর জন্য নারায়ণগঞ্জ সেন্ট্রাল খেয়াঘাট এলাকায় ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়। তবে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী এ ওয়াকওয়েটি নগরবাসীর কাছে কদর পাওয়ার পাশাপাশি মাদক সেবী ও বিক্রেতাদের কাছে মাদকের আখড়াতেও পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এখানে বসে মাদকের হাট। ফলে বিনোদনপিপাসীরা পড়ে চরম ভোগান্তিতে।
জানা যায়, সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নারায়নগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বন্দর খেয়াঘাটের পাশে নগরবাসীর জন্য গড়ে তোলা হয়েছে হাটা ও বসার স্থান তথা ওয়াকওয়ে, যেখানে মানুষ এসে বসতে পারবে, অবসর সময় কাটাতে পারবে। কিন্তু জায়গাটিতে এখন মাদক সেবীসহ অপরাধীদের অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দিনে দিনে মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়ে চলেছে।
আরও জানা যায়, এখানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় ফেন্সিডিল, গাজা, হেরোইন, ইয়াবাসহ হরেক রকমের মাদকদ্রব্য। সারাদিনই চলে বেচাকেনা, তবে দিন গড়িয়ে বিকেল হতেই শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মাদকসেবিদের আনাগোনা শুরু হয়। কেউ আসে মোটরসাইকেল হাকিয়ে, কেউ আসে রিকশায়, পায়ে হেটে আসা খোরের সংখ্যাও কম নয়। সন্ধ্যার পর ক্রেতা-বিক্রেতার উৎপাত উঠে চরমে, তাদের বেপরোয়া চলাফেরা আর অশালীন আচরনে ওয়াকওয়েতে একটু বিনোদনের খোঁজে আসা মানুষের পথচলা দুরূহ হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যা হতে মধ্য রাত পর্যন্ত চলে মাদকের জমজমাট ব্যবসা।
নগরবাসীর মতে, নগরবাসীর বিনোদনের জন্য নেই উল্লেখযোগ্য কোনো পার্ক, নেই তেমন কোনো খেলাধূলার মাঠ অথবা খোলা আকাশের নীচে বসে সময় কাটানোর মতো জায়গাও খুব একটা নেই। যে দুই-একটা স্থান রয়েছে তাদের মধ্যে সেন্ট্রাল খেয়াঘাট সংলগ্ন শীতলক্ষ্যার নদীর তীরের ওয়াকওয়েটি অন্যতম। তবে এ স্থানটি বর্তমানে একটি অনিরাপদ স্থান হিসাবে চিহ্নিত হয়ে পড়েছে। এখানে সন্ধ্যার পর এমনকি মাঝে মাঝে দিনের বেলায় আসলেও ছিনতাইয়ের কবলে পড়তে হয়। তাছাড়া প্রায় সবসময়ই মাদক বিক্রেতা ও ক্রেতাদের আনাগোনাতো আছেই। এসকল ছিনতাইকারী, মাদক বিক্রেতা ও ক্রেতাদের কারণে এখানে একটু স্বস্তির খোঁজে আসা সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীণতায় ভুগছে।
সেন্ট্রাল খেয়াঘাট সংলগ্ন এক চা দোকানী বলেন, এখানে প্রায় সবসময়ই বখাটেরা আড্ডা দেয়। তবে দিনের বেলায় যেমন তেমন রাতের বেলায় এদের উৎপাত বেড়ে যায় কয়েকগুন। মাদক বিক্রি, মাদক সেবন, মেয়েদের দেখলে ইভটিজিং করা সহ অনেক সময় মানুষজন কম থাকলে মাঝে মাঝে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে বলে জানায় এ চা দোকানী।
আরেক চা বিক্রেতা বলেন, এ স্থানটিতে সাধারণ মানুষেরা প্রায়ই হাটতে এবং গল্প-গুজব করতে আসতো। তখন আমাদের বেচা-বিক্রিও বেশী হতো। কিন্তু কিছুদিন ধরে অপরাধীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানে আসা ভালো মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমছে। ফলে আমাদের বেচা-বিক্রিও আগের চেয়ে অনেক কমেছে।
এই সব বখাটে, মাদক সেবী, বিক্রেতা ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
No posts found.